রাঢ়ের বাল্মীকি তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১২৩ তম জন্মজয়ন্তীতে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হলো তিনি তাঁর সাহিত্যে যে উত্তরণের কথা বলে গেছেন আজ তাঁর জন্মদিন পালন কি সেই সত্যের ইঙ্গিত দেয় না?সমাজ যেমন পাল্টায়,তেমনি তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বদলায় তার সংস্কার তার সংস্কৃতি।
গত বছর পর্যন্ত আমরা লাভপুর এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষজন তাঁর জন্মদিন যেভাবে পালন করে এসেছি,আজ তাঁর জন্মদিন পালন করলাম সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে ভিন্নভাবে। প্রযুক্তির যুগে জন্মদিন পালনের এই যে অভিনবত্ব তাও তো একপ্রকার উত্তরণের দৃষ্টান্ত।বাড়িতে বসে প্রণাম জানানোর অভিনব এই পদ্ধতি আমরা কিছুকাল আগেও বোধ হয় ভাবতে পারিনি।মনে পড়ে যায় 'তমসা' গল্পের অন্ধ পঙ্খির কথা।যে টেলিগ্রাফের পোষ্টে কান পেতে বর্ধমানের ঝুমুর দলের দিদিমণির সাথে কথা বলবার বৃথা চেষ্টা করেছিলো।সেদিন তা হাস্যকর মনে হলেও কিন্তু পরবর্তীতে সেই হাসি সত্যে পরিণত হয়েছিলো। আজ ধাত্রীদেবতায় অল্পসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতেও বৃহৎ সংখ্যক মানুষকে বাড়িতে বসিয়ে এই তর্পণ যোগ্যে সামিল করতে পারাটাও তারাশংকর কথিত কালান্তরের উত্তরণের দিকটিকেই প্রকোটিত করে।
প্রযুক্তিগত এই যে অভিনবত্ব তাও তারাশংকরের সাহিত্যের উল্লেখযোগ্যদিক।তিনি সত্যদ্রষ্টা, তিনি কালান্তরের কবি।রাঢ়ের এই চারণকবিকে আমার প্রণাম জানিয়ে কবিগুরুর ভাষায় বলি-
"আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণ ধুলার তলে।"
Comments
Post a Comment